জন্ম নিয়ন্ত্রণের স্বল্পমেয়াদি পদ্ধতি
সুখী পরিবার ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে পরিবার পরিকল্পনা ও জন্ম নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা অপরিসীম। আজ আমরা জন্ম নিয়ন্ত্রণের স্বল্পমেয়াদি পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।
স্বল্পমেয়াদী পদ্ধতি কি?
জন্মনিয়ন্ত্রণের যেসব পদ্ধতি নিয়মিত ব্যবহার করতে হয় অথবা একবার নিলে অল্প কিছুদিনের জন্য গর্ভধারণ বন্ধ থাকে সেগুলোকে স্বল্পমেয়াদী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বলে। স্বল্পমেয়াদী পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে মহিলাদের জন্য খাবার বড়ি ও ইনজেকশন এবং পুরুষদের জন্য কনডম।
স্বল্পমেয়াদী পদ্ধতি কাদের জন্য উপযোগী?
খাবার বড়ি ও কনডম সাধারণত নব-বিবাহিত দম্পতি যাদের এখনও সন্তান হয়নি তাদের জন্য উপযোগী। এছাড়াও বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে কনডম ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি, যেমন:
- স্ত্রী পরপর দুইদিন বড়ি খেতে ভুলে গেলে
- স্ত্রী নির্দিষ্ট সময়ে ইনজেকশন নিতে না পারলে পরবর্তী ইনজেকশন নেয়া পর্যন্ত
- স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণের পর ৩ মাস
খাবার বড়ি
মহিলাদের জন্য একটি নিরাপদ ও কার্যকর অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। গর্ভধারণ বন্ধ রাখতে প্রতিদিন একটি করে বড়ি খেতে হয়।
খাবার বড়ির সুবিধা
- সঠিকভাবে ব্যবহার করলে এর কার্যকারিতার হার ৯৯%
- সহজেই পাওয়া যায় এবং খাবার নিয়মও সহজ
- মাসিক নিয়মিত হয়
- বড়ি খাওয়া ছেড়ে দিলে গর্ভধারণ করা যায়
- আয়রন বড়ি সেবনে রক্ত স্বল্পতা হ্রাস পায়
খাবার বড়ি খাওয়ার নিয়ম
- মাসিক হওয়ার প্রথম দিন থেকে একটি করে বড়ি খেতে হবে
- একদিন বড়ি খেতে ভুলে গেলে তার পরদিন যখনই মনে পড়বে একটি বড়ি খেতে হবে এবং নির্ধারিত সময়ে আর একটি বড়ি খেতে হবে
- পরপর দুদিন বড়ি খেতে ভুলে গেলে, পরের দুদিন দুটি করে বড়ি খেতে হবে এবং এই বড়ির পাতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কনডম ব্যবহার করতে হবে
- খাবার বড়ি ব্যবহারে ছোটখাট কিছু অসুবিধা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (মাথা ঘোরানো, বমি বমি ভাব ইত্যাদি) দেখা দিতে পারে, তবে ৩-৪ মাসের মধ্যে এসব অসুবিধা ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া চলে যায়।
কনডম
পুরুষের জন্য একটি নিরাপদ, সহজ এবং কার্যকর অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। প্রতিবার সহবাসের সময় একটি নতুন কনডম ব্যবহার করতে হয়।
কনডমের সুবিধা
- নিয়মিত ও সঠিকভাবে ব্যবহার করলে এর কার্যকারিতার হার ৯৭%
- এইচআইভি/এইডস এবং অন্যকোন যৌনবাহিত রোগ ছড়ায় না, বরং প্রতিরোধ করে
- সহবাসে কোনো অসুবিধার সৃষ্টি করে না
- ব্যবহারের জন্য কোনো শারীরিক পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না
- ব্যবহারে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই
- সহজে এবং কম দামে পাওয়া যায়
কনডমের অসুবিধা
- কনডম ব্যবহারে কেউ কেউ সাময়িক অস্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে পারেন। কারো কারো এলার্জি থাকতে পারে। এছাড়া তেমন কোন অসুবিধা নেই।
কনডম ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
- প্রতিবার সহবাসের সময় একটি নতুন কনডম উত্থিত পুরুষাঙ্গে পরতে হয়
- কনডম পরার সময় সামনের অংশটি চেপে ধরে নিতে হবে যাতে করে বাতাস ভেতরে ঢুকে না যায়; কারণ, বাতাস ঢুকলে কনডম ফেটে যেতে পারে
- কনডম এমনভাবে পরতে হবে যাতে সম্পূর্ণ পুরুষাঙ্গ ঢেকে যায়
- সহবাসের শুরু থেকে বীর্যপাত হওয়া পর্যন্ত কনডম পরে থাকতে হয়
- সহবাসের পর পুরুষাঙ্গ বের করার সময় কনডমটি সাবধানে ধরে রাখতে হয় যাতে এটি খুলে না যায়
- সহবাসের পর উত্থিত অবস্থায় পুরুষাঙ্গ থেকে কনডমটি খুলে ফেলতে হয়
- ব্যবহৃত কনডম কাগজে মুড়ে ডাস্টবিনে অথবা মাটিতে পুঁতে ফেলে হাত ধুতে হবে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন